শুরু হলো পবিত্র রমজান মাস। কিন্তু এ রমজান মাস এলেই পণ্যের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে। কিছু পণ্যের দাম বেড়ে যায় অনেক। বিশেষ করে রমজানে ডাল, ছোলা, চিনি, পেঁয়াজ, রসুন, খেজুর ও ভোজ্যতেলের চাহিদা বেশি থাকায় এসবের দাম বেশি বাড়ে। সাধারণত বাজারে পর্যাপ্ত পণ্য কিংবা সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে দাম বাড়ে না। কিন্তু আমাদের দেশে দেখা যায় বাজারে পর্যাপ্ত পণ্য থাকলেও দাম স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি। জিনিসপত্রের দাম ভোক্তার ক্রয়সীমার বাইরে চলে যায়।
অনেক সময় বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেও পণ্যের দাম বাড়ানো হয়। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতিবছর নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম ঊর্ধ্বমুখী হয় রোজা সামনে রেখে। অথচ বিশ্বের কোথাও এরকম দেখা যায় না। বরং তার উল্টোটা দেখা যায়। প্রায় সব মুসলিম দেশেই রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমে যায়। সরকার ভুর্তুকি প্রদান করে। ভোক্তারা এতে স্বস্তিতে থাকেন। কিন্তু বাংলাদেশে তার ব্যতিক্রম চিত্র। নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের অজুহাতের অভাব থাকে না।
দেখা গেছে সিন্ডিকেট করে মূল্য বাড়িয়ে দেন এক শ্রেণির ব্যবসায়ী। আবার এই রমজান মাসে ভেজাল ও নিম্নমানের পণ্য বাজারে বিক্রি করা হয় দেদারছে। রমজান সংযম পালনের মাস। অথচ এই সংযমের মাসেই যেন বেশি অসংযমী হয়ে ওঠেন ব্যবসায়ীরা। রমজানের পর পবিত্র ঈদুল ফিতর। তাই রোজা ও ঈদে যাতে পণ্যমূল্য ভোক্তাদের সাধ্যের মধ্যে থাকে সে জন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। এ জন্য বাজার মনিটরিং জোরদার করতে হবে। মূল্যবৃদ্ধির অশুভ প্রবণতা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
সরকারের তরফে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে মাঠে থাকছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। পাইকারি ও খুচরা বাজার বিশেষ করে যারা পণ্যের অবৈধ মজুদ রেখে মূল্য বাড়িয়ে দেবে তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান ও কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সেটি শুধুই কথার কথা। বাজার চিত্র পুরো উল্টো। এক্ষেত্রে সরকার, ব্যবসায়ীমহলসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ভোক্তাস্বার্থ রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে।